গল্প: বিদায়
- সরজিৎ ঘোষ
বিদায় শব্দটা কানে আসলেই মনটা কেমন যেন হু হু করে ওঠে। এমন কেন হয় বলুন তো? বিদায় আসলে বিচ্ছেদ। প্রিয় কোন কিছুকেই বিদায় দিতে মন চায় না, কিন্তু মানুষের জীবন তো নদীর মতো বহমান, চিরদিন এক স্থানে থেমে থাকেও না৷ এভাবেই জীবনের পরতে পরতে ছিন্ন হয় কত প্রিয় বন্ধন! দীর্ঘ কর্ম জীবন থেকে আজ আমাদের থেকে বিদায় গ্রহণ করে চলে যাচ্ছেন আমাদের সকলের প্রিয় রেঞ্জার সাহেব। নিয়মের বাধ্যবাধকতা আর সময়ের তাগিদে বিদায় যেন এক অসহনীয় যন্ত্রণার নির্মম বাস্তবতা।
রেঞ্জার সাহেবের বিদায় অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে কিছুক্ষণ আগেই। অনুষ্ঠান শেষে রয়েছে মধ্যাহ্ন ভোজেরও আয়োজন। সেই মতো এক সঙ্গে খাওয়া দাওয়া সেরে রেঞ্জার সাহেবকে নিয়ে ঘরোয়া আড্ডায় আমরা মেতে উঠেছি সকলেই।আগামীকাল থেকে আর রেঞ্জার সাহেবকে আমাদের মধ্যে পাব না। "যেতে নাহি দিব" বলে আটকে রাখার সাধ্য আমাদের কারোর নেই। এমন একটা মানুষের সান্নিধ্য মিস করব প্রতি মুহুর্তেই। রেঞ্জার সাহেবের থেকেই অনেক কিছু জানার আছে। জানার কৌতূহল আমার চিরকালের। সুদূর কলকাতা থেকে আজ থেকে বহু বছর আগে জঙ্গলের জীবনে চাকরি করতে আসার অভিজ্ঞতা শুনব বলেই ঘিরে ধরেছি তখন রেঞ্জার সাহেবকে। আমিই জিজ্ঞেস করে বসলাম,
-আপনি তো কলকাতার মানুষ। কলকাতা ছেড়ে যখন এখানে এলেন, জঙ্গলের এই পরিবেশে আপনার অসুবিধা হয়নি? কীভাবেই বা আপনি শহর কলকাতার নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত মানুষটা এই পরিবেশে আটকে গেলেন?
রেঞ্জার সাহেব মিনিট দুয়েক চুপ করে থাকলেন। কারো মুখে কোনো শব্দ নেই। সে সময় একটা পিন পড়ে গেলে সে আওয়াজটাও তখন কানে আসবে। এই মিনিট দুয়েক সময়ে কী যেন সব ভেবে নিলেন রেঞ্জার সাহেব। তারপর বলতে শুরু করলেন সে গল্প.....
জানো তো মানুষ ভাবে এক, আর হয় আর এক। ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টে চাকরি করার ইচ্ছে আমার একদমই ছিল না। জয়েন করলাম ফরেস্ট গার্ড হিসেবে গরুমারাতে। জয়েন করার পর মনে মনে ঠিক করেই নিয়েছিলাম খুব বেশি হলে মাস ছয়েক চাকরিটা করব। কারণ আরো বেশ কয়েকটা পরীক্ষা দিয়ে রেখেছি, রেজাল্ট বেরোইনি তখনো পর্যন্ত। কোনো না কোনো একটা চাকরি পাবই। মনের মধ্যে একেবারে দৃঢ় বিশ্বাস। কারণ শহর কলকাতা ছেড়ে এই জঙ্গলে পরে থাকার কোনো মানেই হয় না। দরকার পড়লে কম স্যালারির এবং কম গ্রেডের চাকরি করতেও তখন রাজি। কিন্তু আমার প্ল্যানিংয়ের ওপর অলক্ষ্যে থেকে অন্য কেউ প্ল্যানিং করে বসে আছেন তখন। না। নতুন কোনো চাকরিই জুটল না। ভাগ্য প্রতিকূল। গরুমারাতেই থাকতে হবে, কোনো উপায় নেই। নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত কোলাহল মুখর পরিবেশ থেকে জঙ্গলের কোয়ার্টার? ভাবতেই পারছি না যেন। একটা স্যাঁতসেঁতে ঘর, দেয়াল থেকে চুন খসে পড়ছে।ঘরের মধ্যে আরশোলা, টিকটিকির উৎপাত। আর তখন ইলেকট্রিক ছিল না আমার কোয়ার্টারে। কী করে যে থাকব এখানে, কপালে তখন চিন্তার ভাঁজ। বয়স আর কত হবে চব্বিশ পঁচিশ। তখন তো আর ফেসবুক বা হোয়াটস্যাপ ছিল না বা একটা স্মার্ট ফোন। বই পড়ার নেশা টুকটাক ছিল। কত আর বই পড়ে সময় কাটাবো। তাই মানিয়ে নিতে হবেই। জয়েন করার ঠিক দুদিন পর আমার যে রেঞ্জার সাহেব ছিলেন তখন, আমি সেই সাহেবকে জিজ্ঞেস করে জেনেছিলাম, এত নাম থাকতে এই জঙ্গলের নাম গরুমারা কেন? রেঞ্জার সাহেব বলেছিলেন,
"যতদূর শুনেছিলাম স্বাধীনতার আগেই ১৯৪২ সালেই গরুমারাকে সংরক্ষিত শিকারভূমি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। সে সময় লাটাগুড়িতে বাঘের ডাক শোনা যেত। এক দিন হাট থেকে ফেরার পথে রাত হয়ে যেতে জঙ্গলের মধ্যেই রাতের ডেরা বাঁধে হাটুরেরা। আগুন-পাহারা, সবই ছিল। তবু তারই মধ্যে গরুর গাড়ির বলদ উঠিয়ে নিয়ে গেল বাঘ। সেই থেকে জঙ্গলের নাম হয়ে গেল গরুমারা।"
জানো, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ওই গরুমারা জঙ্গল মনের মধ্যে আলাদা একটা প্রভাব ফেলল আমার। ওই জঙ্গলে আনন্দ আর আতঙ্ক একসঙ্গে মানুষের সঙ্গী সেজে ঘোরে। হাজারো প্রজাতির উদ্ভিদ। কতক চেনা আর অধিকাংশই অচেনা। শাল, টাটারী, চিলাউনে, শিমুল, শীরিষ, আমলকী, চালতার এই জঙ্গলকে পুষ্টি যুগিয়ে চলেছে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া চারটি তরুণী নদী। মূর্তি, জলঢাকা, গরাতি আর ইংডং। এই চারটি নদীর একটি নদী গরাতিকে আমি আমার প্রেয়সী রূপে কল্পনা করতাম। নদীর চর ঘেঁষে অরণ্য কোথাও কোথাও গহন হয়েছে। সেখানে অনেক জায়গায় ভরদুপুরের চড়া রোদেও অন্ধকার বিরাজ করে। ছমছম করে গা। হরিণ, গাউর, এমনকি গণ্ডারও সেই সঙ্গে হাতি, সম্বর, লেপার্ড, শুয়োর, নানান জীব জন্তু সচক্ষে সামনে থেকে দেখা আর সেই সঙ্গে দেখা নানা প্রজাতির পাখি আর অসংখ্য ময়ূর যেন আলো করে রেখেছে গরুমারার গাছ-গাছালি। শুধু কি তাই, ধামসা মাদলের আওয়াজ, রাভাদের নাচ এক অনন্য অনুভূতির স্বাদ। আর এই সব কিছুই আমাকে থাকার রসদ জুগিয়েছে দিনের পর দিন। তারপর থেকে কেটে গেছে পঁয়ত্রিশ বছর। এখানেই বাড়ি তৈরি করে নিয়েছি। মেয়েদের বড় হওয়া,পড়াশোনা সবই তো এই উত্তরবঙ্গেই।
মুগ্ধ হয়ে শুনছিলাম রেঞ্জার সাহেবের অতীত দিনের গল্প। বিভূতিভূষণের আরণ্যক পড়েছিলাম। এ যেন আর এক নতুন আরণ্যক জীবনের গল্প। কৌতূহলী মন নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম আবার,
-স্যার জঙ্গলে তো এতদিন কাটালেন, জঙ্গলের সাথে অভ্যস্ত হয়ে উঠলেন। আপনি তো কলকাতার ছেলে। কর্মজীবনে এমন কোনো ঘটনা আছে যেটা আপনি আজও ভুলতে পারেন নি?
-আছে আছে। অনেক গল্প আছে। এই জঙ্গলের জীবনে এসে অনেক ছোট খাটো ঘটনা ঘটেছে। তবে একটা ঘটনার কথা আজ তোমাদের বলি... জয়েন করার পর থেকে মাস ছয়েক কেটে গেছে। কিছুতেই মন টিকছে না। বন্ধু বান্ধব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোথায় যেন পড়ে আছি। মন মেজাজ ভালো নেই আমার। কোয়ার্টারে থাকি। এক বদ্ধ জীবন। একদিন অফিসের কাজকর্ম সেরে কোয়ার্টারে ফিরছি লাঞ্চ করার জন্য। তখন ওই একটা ভাঙাচোরা পুরানো সাইকেলটাই আমার ভরসা। হঠাৎ দেখি বেশ কিছুটা দূরে চা বাগানের খাঁড়ির দিকে রাস্তাটায় বেশ কয়েকজন লোক হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে দাঁড়িয়ে। ব্যাপারটা বুঝতে সাইকেলটা স্ট্যাণ্ড করে দিয়ে এগিয়ে গিয়ে দেখি, একটা লেপার্ডের বাচ্চা। আর ওই শাবকটাকে মারার জন্য লাঠিসোঁটা নিয়ে লোকজন সব উদ্যত। তৎক্ষণাৎ আমি গিয়ে ওদের হাত থেকে উদ্ধার করি বাচ্চাটিকে। যত দূর জানি লেপার্ড সাধারণত জঙ্গলেই থাকে। কিন্তু বাচ্চা দেওয়ার সময় চলে আসে লোকালয়ের দিকে। সাধারণত চা বাগানের খাঁড়িতে এসে এরা বাচ্চাদের জন্ম দেয়। খাঁড়িতে থাকলে বাচ্চা গুলোকে লুকিয়ে রাখাটা সহজ হয় ওদের। আর এই সময় লেপার্ডরা লোকালয়ে হানা দেয় রাতের বেলা। ওই হাঁস, মুরগি, ছাগল ইত্যাদি শিকার করে বেড়ায়।কারণ খাবার তো চাই ওদের। আর সেই কারণেই কোনো ভাবে হয়তো চলে এসেছিল বাচ্চাটি। এদিকে ওরা লেপার্ডের বাচ্চাটিকে মারার জন্য রেডি। বাচ্চাটিকে দেখে এত মায়া লাগলো যে আমি ওই লেপার্ডের বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে নিয়ে এলাম কোয়ার্টারে। কিন্তু কোয়ার্টারে তো আর রাখা যায় না। যেহেতু বন্য জন্তুদের জন্য রিহ্যাব সেন্টার আছে। তাই বাচ্চাটিকে আমি পরে নিয়ে গেলাম রিহ্যাব সেন্টারে। আমার রেঞ্জার সাহেব তখন আমাকেই দায়িত্ব দিয়ে দিলেন ওর দেখা শোনার জন্য। যেহেতু আমার মন টিকছে না, সেটা উনি জানতেন। উনিই আমাকে ডেকে বললেন "আজ থেকে এই শাবকটির দায়িত্ব তোমার একার।" তারপর থেকে আমার তত্ত্বাবধানে বাচ্চাটিকে বড়ো করতে থাকলাম, ওর একটা নামও দিলাম। আদর করে ডাকতাম লুতু বলে। যেন নিজের সন্তানের মতোই। বেশ কয়েক দিন ওর পরিচর্যায় নিজেকে নিমগ্ন করে ফেলেছিলাম। তারপর যখন বুঝলাম এবার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া যাবে,তাও ওই এক বছর পর, তখন একদিন জঙ্গলে ছেড়ে এলাম। জঙ্গলে ছাড়তে গিয়ে মনটা ভীষণ খারাপ করছিল, যতই হোক একটা মায়ায় জড়িয়ে তো গিয়েছিলাম। মনে পড়েছিল সেই কথা, বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। তাই সেই অরণ্য সন্তানকে ফিরিয়ে দিলাম অরণ্য মায়ের কোলে। তারপর থেকে এই বন্য পরিবেশের মায়ায় কখন যে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছিলাম বুঝতেই পারিনি। ভালোবেসে ফেললাম সভ্য জগতের আড়ালে বন্য জগতের রূপ। জীবনানন্দের মতো আমারও মনে হতে লাগলো..
"তোমরা যেখানে সাধ চ'লে যাও — আমি এই অরণ্যের পারে র'য়ে যাব।"
তারপর থেকে কেটে গেল বেশ কয়েকটা বছর।জলদাপাড়ায় আসার আগে বিট অফিসার হিসেব নিযুক্ত হয়েছি চাপরামারি সাব ডিভিশনে। জঙ্গলের জীবনে থাকতে থাকতে বেশ সাহসও সঞ্চয় করে ফেলেছি তখন। আমাকে দেখে তখন কে বলবে এই সেই শহুরে আদব কায়দার শৌখিন যুবক? বন্য জীব জন্তু, হিংস্র প্রাণী মাঝে মধ্যেই চোখে পড়ে, কখনো তাদের মুখের সামনেও পড়েছি। একদিন শীতকালের এক সন্ধ্যায় ঘটে গেল একটা ঘটনা। কাজকর্ম সেরে বেরোতেই একটু লেট হয়ে গিয়েছিল। জঙ্গলের ভিতর দিয়ে কোয়ার্টার ফিরছি স্কুটার চালিয়ে। কোয়ার্টারটি যেখানে জায়গাটার নাম ছিল সিপচু। স্কুটারে পিছনে বসে আছে আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট বিমল থাপা। হঠাৎ গাছ থেকে ধপ করে কী একটা পড়ার আওয়াজ হলো। সামনে তাকিয়ে দেখি একটা পূর্ণ বয়স্ক লেপার্ড। একে বারে স্কুটারের সামনে। গাড়ির আলোটা চোখে পড়তেই চোখ দুটো জ্বল জ্বল করে উঠল। জানিনা কি হলো স্কুটারের স্টার্ট হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল। কিছুতেই আর গাড়ি স্টার্ট নেয় না। পিছন বসে বিমল থাপা বলে যাচ্ছে "স্যার তাড়াতাড়ি গাড়ি স্টার্ট করুন, না হলে দুজনেই মারা পড়ব।" আর এদিকে ভয়ে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে। গাড়ি স্টার্ট না নিলে আমারই করার কী আছে? বিপদ কখন যে আসে কে আর বলতে পারে। বিমলের হাতে রয়েছে একটা খুকরি। আর এদিকে লেপার্ডটা এগিয়ে আসছে আক্রমণ করার ভঙ্গিতে। আমরা দুজনেই কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ভাগ্যের হাতে সঁপে দিয়েছি দুজনেই। তারপর যা ঘটলো আমাদের কল্পনার বাইরে। লেপার্ডটা এগিয়ে এলো আস্তে আস্তে। এগিয়ে এসে আমাকে শুঁকতে লাগলো বেশ খানিকক্ষণ। সামনের দুটো পা আমার দিকে এগিয়ে দিল, তারপর মাথাটা নিয়ে আমার হাঁটুতে ঘষতে লাগল অনেকক্ষণ ধরে। ততক্ষণে আমি চোখ বন্ধ করে নিয়েছিলাম। চোখ খুলতেই দেখি তার অদ্ভুত প্রতিক্রিয়া। আর এদিকে বিমল সাইডে সরে গিয়ে এই দৃশ্য দেখে যাচ্ছে। মিনিট খানেক পর লেপার্ডটি একটা হুঙ্কার দিয়ে উঠল। যেন কিছু বলতে চায় আমাকে। তারপর নিজে থেকেই আস্তে আস্তে জঙ্গলের মধ্যে মিলিয়ে গেল। শীতের সন্ধ্যেতে আমি ঘেমে ভিজে উঠেছি। বিমল বলে ,"স্যার গাড়ি স্টার্ট নেয় কিনা দেখুন।" স্টার্ট দিতেই সঙ্গে সঙ্গেই গাড়ি স্টার্ট নিয়ে নেয়। বিন্দু মাত্র দেরী না করেই চলে আসি তাড়াতাড়ি। কোয়ার্টারে পৌঁছাই। তারপর আতঙ্ক কাটিয়ে উঠে ভাবতে থাকি এরকমটা হওয়ার কারণ? তখন মনে পড়ে যায় কয়েক বছর আগের সেই অপত্য স্নেহের ঘটনা। মনে হয় সেই লেপার্ডের বাচ্চাটি, যাকে আমি নিজের হাতে পরিচর্যা করেছিলাম। তা নাহলে এমনটাই বা হলো কেন? আসলে সবটাই আমার মনে হওয়া কিন্তু।
রেঞ্জার সাহেব গল্প শেষ করেই চশমাটা চোখ থেকে নামিয়ে রুমাল দিয়ে দু চোখের কোণ তখন মুছে নিচ্ছিল। এক অদ্ভুত মায়াময় বন্য জীবন। সবাই তখন নীরব। বন্য জগতে এভাবেই বুঝি জড়িয়ে যেতে হয়। মনে মনে ভাবছিলাম, আমিও তো শহর থেকে এসেছি। মাত্র কয়েক মাস হলো জয়েন করেছি। আমিও হয়তো এভাবেই ভালোবেসে ফেলব জঙ্গল,আর জঙ্গলের জীবনকে। ভাবনার জগত থেকে সরে এসে রেঞ্জার সাহেবে গল্পের শেষ অংশটুকুর রেশ ধরেই বললাম,
-স্যার আমাদেরও তাই মনে হয়। লেপার্ডটাই হয়তো আপনাকে চিনতে পেরেছিল। প্রভুর প্রতি আনুগত্য থেকেই এটা সম্ভব। এ হলো ভালোবাসার প্রতিদান।
রেঞ্জার সাহেব বললেন,
-ভালোবাসার প্রতিদানই বটে। আর চাকরি জীবনের শেষ দিনে এসে একটা কথাই বলব, এই জঙ্গল, জঙ্গলের মানুষ জন, আর তোমাদের থেকেও যা পেয়েছি,সেটাই বা কম কোথায়। সেটা তো ভালোবাসার প্রতিদান ছাড়া আর কিছুই নয়।
------------------------------------------------------------------------------------